বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১

সীতাকুন্ডে শ্রমিক দল নেতা আরমান হত্যার নেপথ্যে

প্রকাশ: ৩ জানুয়ারি ২০২৫ | ৭:৫৬ অপরাহ্ণ আপডেট: ৩ জানুয়ারি ২০২৫ | ৭:৫৬ অপরাহ্ণ
সীতাকুন্ডে শ্রমিক দল নেতা আরমান হত্যার নেপথ্যে

নিজস্ব প্রতিবেদক 

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে মীর আরমান নামে শ্রমিক দলের এক নেতাকে হাত-পা বেঁধে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।দুর্বৃত্তরা এসময় আরমানের পায়ের রগও কেটে দেন।আধিপত্যা বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির একটি গ্রুপ এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের জঙ্গল সলিমপুরের ছিন্নমূল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মীর আরমান (৪৭) রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মৃত মীর মোতাহের হোসেনের ছেলে। তবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে বসবাস করেন।তিনি ওয়ার্ড শ্রমিক দলের আহবায়ক ও ছিন্নমূল বস্তিবাসী সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,আরমান বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ছিন্নমূল এলাকায় একটি চায়ের দোকানে বসে চা পান করছিলেন।এসময় একটা ফোন আসলে তিনি কথা বলতে বলতে সেখান থেকে চলে যান। কিছুক্ষণ পর চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান।দুর্বৃত্তরা আরমানের হাত ও পায়ের রগ কেটে দেন। একইসাথে তার শরীরের সম্পর্শকাতর স্থানে, পিঠে, কাঁধে ছুরিকাঘাত করা হয়।পরে।সেখান থেকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

স্থানীয় কয়েকটি সূত্রে জানা যায়,ছিন্নমূলের কাঁঠালপাড়ার ইয়াছিন, এয়াকুব ও মশিউরের গ্রুপের লোকজন এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এদের মধ্যে ইয়াছিন যুবদলের সাবেক নেতা। আর মশিউর একসময় আওয়ামী লীগের শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত হলেও বর্তমানে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। এদের সবাই স্থানীয় বিএনপি নেতা রোকন মেম্বারের অনুসারী বলে পরিচিত।

জানা গেছে,নিহত আরমান দুই দশকের বেশি সময় ধরে ছিন্নমূলে বসবাস করে আসছেন। তার ডিশ, ইন্টারনেট ও প্লট ব্যবসা ছিলো। সম্প্রতি সেখানে বিএনপির কমিটি ও ছিন্নমূল বস্তিবাসী সংগ্রাম পরিষদের কমিটি গঠন নিয়ে রোকন মেম্বারের সাথে তাঁর দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।সেই দ্বন্দ্বের জের ধরে আরমানকে হত্যা করা হয়।

আরমানের বন্ধু উত্তর জেলা যুবদলের নেতা মিজানুর রহমান রাজু জানান, মীর আরমান আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল।সে এলাকায় চোর ডাকাতদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত প্রতিবাদ করে আসছিল। আর সে কারণে জঙ্গল সলিমপুরের ডাকাত ইয়াকুব , আলা-আমিন ও‌ কাজী মশিউরের লোকজন তাকে হত্যা করেছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ইউনিয়ন ছাত্রদল যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান রিদোয়ান বলেন, আরমানকে নৃশংসভাবে শিকল দিয়ে বেঁধে হত্যা করা হয়েছে। মূলত মশিউর, এয়াকুব ও কাঁঠাল পাড়ার ইয়াছিন -এই তিন গ্রুপের সদস্যদের হাতে আরমান খুন হয়েছে। ব্যবসা বাণিজ্য আর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই খুন হয়েছে।

সীতাকুণ্ড থানার ওসি তদন্ত মো. আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করছি।আর ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। কাউকে আটকও করা যায়নি।

সম্পর্কিত পোস্ট

সর্বশেষ পোস্ট



Shares