বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১

বিএনপির মোড়কে আওয়ামী ডুপ্লিকেট ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার পথে বাংলাদেশ!

প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৪ | ১১:০৪ অপরাহ্ণ আপডেট: ৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৪:৩১ অপরাহ্ণ
বিএনপির মোড়কে আওয়ামী ডুপ্লিকেট ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার পথে বাংলাদেশ!

আব্দুল হান্নান চৌধুরী

গত ৫ আগষ্ট ফ্যাসিবাদী হাসিনার পদত্যাগের পর অপরিহার্য ছিলো একটি বিপ্লবী সরকার প্রতিষ্ঠা এব বাকশালী সংবিধান বাতিল করা। কিন্তু তা না করে রাজনৈতিক দলগুলোর পরামর্শে সংবিধানের ধারাবাহিকতায় গঠিত হলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।বি এনপি দাবী ছিলো কোনো সংস্কার ছাড়া একটি দ্রুত নির্বাচন। তাই তারা বার বার নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষনার জন্য সরকারকে বার বার চাপ সৃষ্টি করছেন।কিন্তু জামায়তে ইসলামীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা বলছে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া এই মুহুর্তে কোনো নির্বাচন নয়।তা ছাড়া এটাও দাবী করছে যে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের রচিত এই বাকশালি সংবিধানও পরিবর্তন করতে হবে।

এরই মধ্যে হাসিনার পদত্যাগ সংক্রান্ত প্রেসিডেন্টের মন্তব্য নিয়ে গোটা দেশের জনগণ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। দাবী উঠেছে প্রসিডেন্ট চুপ্পুকে অতি দ্রুত সরিয়ে দেশ প্রেমিক প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দেয়ার।কিন্তু এতে বাধ সাধে বিএনপি।বিএনপি বার বার বলছে প্রসিডেন্ট চুপ্পুকে সরালে সাংবিধানিক সংকট তৈরী হতে পারে।তা ছাড়া তারা এই বাকশালী সংবিধানকেও পরিবর্তন করতে কেনোভাবেই রাজি নয়।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের সংস্কার প্রস্তাবে জামায়াতসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো সব সময় ঐক্যমত পোষন করেছে শুধু মাত্র বি এন পি ছাড়া।কথা হলো পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তির কোনো দোসর রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বসে থাকতে পারেনা।কারন যে কোনো মুহুর্তে আওয়ামিলীগ চুপ্পুকে দিয়ে একটি বড় ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে দিতে পারে।তা ছাড়া যে সংবিধান দিয়ে আওয়ামী লীগ সারাদেশে ফ্যাসিবাদী রাজত্ব কায়েম করেছে, মানুষের অধিকার এবং বাক স্বাধীনতা হরন করেছে সে সংবিধান কখনো জারি থাকতে পারেনা।সরকারসহ সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে অবশ্যই জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে ধারণ করেই নির্বাচনসহ রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে।তা নাহলে শহীদদের রক্তের সাথে বেইমানী করা হবে।

জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে পাশ কাটিয়ে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে চুপ্পুকে রেখে বাকশালী সংবিধান অব্যাহত রেখে ভবিষ্যতে যে সরকার নির্বাচিত হয়ে আসবে সে সরকার নির্ঘাত বিএনপির মোড়কে আওয়ামী ডুপ্লিকেট ফ্যাসিবাদী সরকারই হবে।আওয়ামীলীগ প্রচারণা চালাচ্ছে যে,৫ আগষ্ট পর্যন্ত যে গণহত্যা হয়েছে তা বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা করে সরকারের উপর দায় চাপাচ্ছে। আওয়ামী ডুপ্লিকেট ফ্যাসিবাদী সরকার তখন এই বিষয়টাকে এস্টাবলিশ করার চেষ্টা করবে এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহীতার অভিযোগ এনে সব কটিকে শূলে চড়াবার ব্যবস্থা করবে।আর আওয়ামিলীগ গনহত্যার দায় থেকে পার পেয়ে যাবে।আওয়ামীলীগ আবার রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হবে।কারন ভারত এদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছে বিএনপির ভারত পন্হি গ্রুপকে কাজে লাগাবার চেষ্টা করছে।

বিএনপির মধ্যকার ভারত পন্থি গ্রুপ ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে সক্রীয় ভুমিকা পালন করছে।মির্জা ফখরুলসহ বি এনপির বেশ কয়েকজন নেতা চুপ্পুর অপসারণ প্রশ্নে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার কথা বলেছেন।তা ছাড়া ছাত্র লীগ নিষিদ্ধের ব্যপারেও বি এনপির অসন্তুষ্টি লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানা বলেই ফেললেন সরকার কার সাথে আলাপ করে ছাত্র লীগ নিষিদ্ধ করলো,ভবিষ্যতে এ সরকার ছাত্র দলকে নিষিদ্ধ যে করবেনা তার কি গ্যারান্টি আছে। সবকিছু মিলে বিএনপিও আওয়ামিলীগের সুরে কথা বলছে।নানকের ভিডিও বার্তায় একবারের জন্য হলেও বিএনপির নাম উল্লেখ করা হয়নি।
এতে বুঝা যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট চুপ্পু প্রসঙ্গ,সংবিধান এবং আওয়ামীলীগকে পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে বিএনপির সাথে একটা বুঝা পড়া হয়েছে।সে জন্য অমুলক নয় যে ভবিষ্যতে বিএনপির মোড়কে বাংলাদেশে আবার নতুন এক ফ্যাসীবাদ প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র এবং জনগণের উচিত সময় থাকতেই জুলাই বিপ্লবের স্পিডকে ধারণ করে  দ্রুত প্রেসিডেন্ট চুপ্পুকে অপসারণ, সংবিধান সংশোধন এবং আওয়ামীলীগের পুনর্বাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়াজ তোলা।

লেখক ও গবেষক

সম্পর্কিত পোস্ট

সর্বশেষ পোস্ট



Shares