বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১

সংঘাত নাকি সংলাপ, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কি হচ্ছে দেশে?

প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৩ | ৪:৪৭ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৩ | ৫:১৯ অপরাহ্ণ
সংঘাত নাকি সংলাপ, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কি হচ্ছে দেশে?

আমাদের কথা 

বাংলাদেশ ঘনিয়ে এসেছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে একাদশ সংসদের ভোটগ্রহণ। এর মানে হলো নির্বাচনের সময় মাত্র আর ২ মাস। তবে দেশে এখনও পর্যন্ত তৈরি হয়নি ভোটের আমেজ।আর যথাসময়ে নির্বাচন হবে কি না সেটা নিয়েও তৈরি হয়েছে সংশয়।নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপির অবস্থান করছে একেবারেই ভিন্ন মেরুতে।

 

আওয়ামী লীগ বলছে সংবিধান মেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। বিএনপি বলছে কেয়ার টেকার সরকার ছাড়া দেশে কোন নির্বাচন হবেনা।আর এই প্রধান দুই দলকে কেন্দ্র করে দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোও বিভক্ত হয়ে পড়েছে।এই মুহুর্তে বিএনপি ও তার সমমনা দলগুলো কেয়ারটেকার সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে।আর সরকারকে টিকিয়ে রাখতে মাঠে আছে আওয়ামী লীগ। যে কারণে দেশে বড় ধরণের সংঘাতের শংকা রয়েছে।

 

 

শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন দিতে এক পায়ে খাড়া আওয়ামী লীগ।বিএনপি না আসলেও নিজেরাই নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই ক্ষমতাসীনরা। আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও সরকার যেকোনো মূল্যে জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন করতে চায়। আর সেভাবেই এগুচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এরমধ্যে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার প্রয়োজনে জরুরী অবস্থাও ঘোষণা করতে পারে বলে রয়েছে গুঞ্জন।

 

বিএনপি ও সমমনা দলগুলো প্রতিদিনই কোনো না কোনো কর্মসূচি পালন করছে। তবে এসব কর্মসূচিতে তেমন চাপে ফেলত পারেনি সরকারকে। বিএনপি’র একাধিক সূত্র বলছে, খুব দ্রুতই বাঁকবদলের মতো কর্মসূচি দেবেন তারা। এরমধ্যে ঢাকা অচল করে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে এই বিরোধী জোট।

আগামী ১৮ অক্টোবর ঢাকায় সমাবেশ করে সরকারকে পদত্যাগের আল্টীমেটাম দেবেন বিএনপি জোট ।সরকার দাবি না মানলে দূর্গাপূজার পর কঠোর কর্মসূচি দেয়ার কথা রয়েছে তাদের।আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে চায় তারা।আর বিএনপির সাথে যুগপতে না থাকলেও এককভাবে সরকার বিরোধী আন্দোলনে নেমেছে জামায়াত শিবির।

 

এদিকে রাজনীতির প্রধান দুই পক্ষই যখন অনড়, তখন আন্তর্জাতিক চাপের ব্যাপারটি প্রধান আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন এবং রাজনীতি কোন পথে যাবে সেটি বিদেশিরাই নির্ধারণ করবেন।

 

কয়েকজন বিশ্লেষক বলছেন, বাংলাদেশে ১৯৯০, ৯৬ এবং ২০০৭ সালের পরিবর্তনের পেছনে আন্তর্জাতিক শক্তি মুখ্য ভূমিকা রেখেছিল।এখন সামনের নির্বাচন নিয়ে অনেক বেশি তৎপর হয়ে উঠেছে পশ্চিমারা।বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অতীতে কখনো বাংলাদেশ নিয়ে এতটা সিরিয়াস দেখা যায়নি। এর বাইরে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বাংলাদেশ নিয়ে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে।

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বড় পরিসরে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টেও বাংলাদেশ ইস্যুটি উত্থাপিত হয়েছে। এরআগে খবর বেরিয়েছিল, বাংলাদেশের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে নীতি পরিবর্তনে অনুরোধ জানিয়েছে ভারত। তবে আদৌ ভারত এ অনুরোধ জানিয়েছিল কি-না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অনুরোধ জানালেও তার যে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি, তা যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ পদক্ষেপেও বোঝা যায়।

এরমধ্যে চরম নাজুক অবস্থায় আছে দেশের অর্থনৈতি।দিন দিন কমছে রিজার্ভ। ভিসা নীতির পর এবার আরও নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে পশ্চিমারা।বড় ধরনের হুমকিতে পড়তে পারে গার্মেন্টস শিল্প। সব মিলিয়ে অনিশ্চিত এক অধ্যায়েই প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ।

 

সম্পর্কিত পোস্ট

সর্বশেষ পোস্ট



Shares